ফ্রিল্যান্সিং নাকি বিজনেস কোনটা করবো?
সুখে থাকার আশায় আমরা আমাদের জীবনে নানান ধরনের কাজ কর্ম করে থাকি। কেউ ব্যবসায় জড়িত, কেউ বা চাকরীতে,মূলত এই দু’ধরনের ব্যক্তিকেই সচরাচর আমাদের সমাজে; সাধারণ ভাবে দেখতে পাওয়া যায়। বর্তমান যুগ অনেক বেশী আধুনিক। আধুনিকতায় ভার্চুয়ালি মানুষের বিচরণ যেমন বেড়েছে তেমনি ভাবে বেড়েছে ডিজিটাল পন্যের চাহিদা। আর এই চাহিদার যোগান দিতেই গড়ে ওঠেছে ভার্চুয়াল নানান ধরনের পেশা ও শ্রম। শুধু তাই-ই নয় এই শ্রমেরও তৈরী হয়েছে নানান ধরনের ক্যাটাগরি ও বিভাগ। ট্রেডিশনাল কাজের ন্যায় এখানেও কাজের চাহিদা ব্যাপক পরিমানে দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন আপনি অনলাইনেই করতে পারছেন ব্যবসা, চাকরী কিংবা ফ্রিল্যান্সিং। তাই আজকে আমরা জানবো অনলাইন ব্যবসা ও ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে।
পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে যদি আপনি পড়েন, তবে অনলাইন কাজের ব্যসিক ধারণা; আশা করি যথার্থই পেয়ে যাবেন। যা আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে! সহজেই বুঝতে পারবেন কোন কাজটি আসলেই আপনার করা উচিৎ কোন কাজটি করা অনচিৎ। তা হলে চলুন শুরু করি। …
মূল আলোচনায় যাওয়ার আগেই আমাদের জানা প্রয়োজন অনলাইন থেকে আয় করার উপায় গুলো কী কী ও কত প্রকার। প্রথমত, অনলাইন আয় বিষয়ক ব্যাপারটা পরিস্কার হলে পরবর্তী আলোচনাটা; বুঝতে অনেকটা সহজ মনে হবে। আমি অনলাইন বৈধ আয়ের একটি লিস্ট তৈরী করেছি এর থেকে ভালো লিস্ট আমার জানা নাই। যদি কারো কাছে, এর থেকেও ভালো লিস্ট থেকে থাকে; তবে অবশ্যই আমাকে শেয়ার করবেন। স্পেমি, এডাল্ট ও কোন প্রকার অবৈধ কাজ নিয়ে আমি কোন কথাই বলবো না। স্কিলহীন ডাটা এন্ট্রি ও মোবাইল দিয়ে আয় বিষয়ক অহেতুক কথা বলে, সময়ও নষ্ট করবো না; ইনশাহ আল্লাহ।
অনলাইন আয়ের উপায় ৬টি:—
১। অনলাইন ব্যবসা
২। ভার্চুয়াল চাকুরী
৩। অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং
৪।এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
৫। অনলাইন আর্ন
৬। ইনফ্লুয়েন্স মার্কেটিং
অনলাইন ব্যবসা:
উদ্ভাবনী চেতনা কিংবা ক্রিয়েটিভ মেধার বিকাশ ঘটিয়ে অনেক উদ্যোগক্তা অনলাইন ব্যবসা পরিচালন করছে। অনলাইন ব্যবসায় মূলত, এমন একটি পন্য কিংবা সেবা যা গ্রাহকদের চাহিদা মিটিয়ে থাকে এবং বিক্রয় কারী হতে গ্রহীতা সেই সেবা পেয়ে উপকৃত ও সমস্যার সমাধান পেয়ে থাকে যার ফলশ্রুতিতে বিক্রেতা মুনাফা অর্জন করে। ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়েই একে অপরের সাথে লেনদেনের মাধ্যমে শেয়ার ভ্যালু সৃষ্টি করে। উভয়ের উইন উইন শেয়ার ভ্যালু তৈরী হওয়ার ঘঠনাকেই মূলত বিজনেস বলে।
যেমন ধরুন, আপনি ৪ টাকার কলম ৫ টাকায় বিক্রি করছেন এটার ফলে ক্রেতা ভ্যালু হিসেবে কলম পেলো আর আপনি পেলেন ১ টাকা বেশী যা আপনার মুনাফা। এতে উভয়ই উইন উইন শেয়ার ভ্যালু পেয়ে উপকৃত হল ! মূলত এটাই বিজনেস। কিন্তু আপনি যদি ৪ টাকার কলম ১০ টাকায় বিক্রি করেন। গ্রাহক ভ্যালু হতে বন্চিত হলো এবং আপনি উল্টো ১ টাকার জায়গায় অতিরিক্ত আরো ৫ টাকাই নিজের করে নিলেন। এর, ফলে গ্রাহক যথার্থ শেয়ার ভ্যালু পেলো না; বরং উল্টো আপনি তার সাথে প্রতারনা করে ৬ টাকাই উইন করলেন। যেহেতু, উভয়ের মাঝে শেয়ার ভ্যালু উইন উইন সিচুয়েশন বজায় থাকলো না তাই একে আমি কখনই বিজনেস বলবো না। বরং বিজনেসের নামে এটা এক ধরনের প্রতারনা। যা মার্কেটিং এর ভাষায় স্কেমিং বলে। অর্থাৎ আমরা বুঝলাম, গ্রাহক শেয়ার ভ্যালু সৃষ্টির মাধ্যমে যেই সব বিজনেস অনলাইন মিডিয়া দ্বারা পরিচালিত হয় তাকেই মূলত অনলাইন বিজনেস বলে। ক্লিয়ার?
অনলাইন জব:
অনলাইন ব্যবসায়ীদের কাজের প্রয়োজনে বিভিন্ন জায়গায় দক্ষ লোকবল নিয়োগ দিতে হয় যাতে তার ব্যবসায়ীক কর্মকান্ড যথার্থ পরিচালিত হয়। আর এই দক্ষ কর্মী হওয়ার জন্য লাগে কোন একটি বিষয়ের উপর অতিব দক্ষতা। একটি প্রতিষ্ঠান কখনও অদক্ষ লোক নিয়োগ দিয়ে ঝুঁকি নিতে চায় না তাই চাকরী করতে হলে আপনাকে অবশ্যই অভিজ্ঞ হতে হবে।
এখন অনেকেই প্রশ্ন করে বলবে, “নতুনরা যদি কাজের সুযোগই না পায় তা হলে তারা দক্ষ হবে কী করে?”
এই প্রশ্নের উত্তরে উল্টো আপনাকেই প্রশ্ন করতে হচ্ছে।
ধরুণ, আপনার একটি অনলাইন সুস্বাদু পিঠার দোকান রয়েছে। এই পিঠার দোকানটি পন্যের গুনগতমানের জন্য মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্যতা পেয়েছে। দিন দিন পিঠার দোকানটি বড় হচ্ছে; ফলে প্রতিষ্ঠানের কর্মীর নিয়োগও বাড়াতে হচ্ছে। আপনি দেখলেন যে আপনার প্রতিষ্ঠানের Outbound Marketing এবং Content Writing আরেকটু ভালো করতে পারলে আপনার সেল আরো বেশী হতো। তাই যথারীতি আপনি জব সার্কুলার দিলেন। এখন প্রশ্ন হলো, আপনি কী নতুন কাউকে নিয়োগ দিবেন? যার Outbound Marketing অথবা কনটেন্ট রাইটিং স্কিলে তেমন কোন অভিজ্ঞতা নেই? ধরলাম আপনি অনেক দয়াবান নতুনদের কথাও চিন্তা করেন। তাই নতুনদেরকে সুযোগটা দিলেন।
আমরা জানি যে একজন সফল উদ্যোগতা সর্বদাই সঠিক কর্মী বাছাই করে। প্রথমত, অনভিজ্ঞ লোক নিয়োগ দেওয়ায় আপনি সফল উদ্যোগতাদের ন্যয় যথার্থ কাজটি করতে পারলেন না। আর দ্বিতীয়ত, কিছু দিন পরই দেখতে পাবেন সেই নিয়োগ কর্মী Outbound Marketing বিজ্ঞাপনে প্রচুর টাকা খরচ করছে কিন্তু সেল এনে দিতে পারছে না। অন্যদিকে, কনটেন্ট রাইটারও গুনগত পন্যের উপস্থাপন, ভালো করে; করতে পারছে না। যার ফলে, প্রতিষ্ঠানের ROI নিচের দিকে চলে যাচ্ছে অপর দিকে সেই কর্মীদেরকে মাসে মাসে বেতন দিয়ে প্রতিষ্ঠানের খরচ দিনকে দিন বেড়েই চলছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি চলতে থাকলে; সফলতা তো দূরের কথা, কয়েক বছরেই প্রতিষ্ঠানটি নাই হয়ে যাবে। তখন আপনি হয়ে যাবেন নাই হওয়া প্রতিষ্ঠানের মালিক মি: অমুক। আবার অনেকেই বলবে আমি নতুনদেরকে কাজটা শিখিয়ে দিবো যাতে সে ভালো করে করতে পারে। আপনার কর্মী নিজের টাকায় স্কুল,কলেজ, ভার্সিটি ১৬ বছর পড়াশোনা করলো আর এখন আপনি তাকে উল্টো নিজের টাকায় মাসে বেতন দিয়ে শিখাবেন ব্যাপারটা হস্যকর হয়ে গেলো না! আপনি যদি সফল উদ্যোগতা হতে চান আপনাকে সর্বদাই সঠিক কর্মী বাছাই করতে হবে; যাতে প্রতিষ্টানের ROI যথার্থ থাকে। তাই বলবো জব করতে আপনাকে অবশ্যই অভিজ্ঞতা অর্জন করতেই হবে।